টুঙ্গিপাড়ায় সাংবাদিক পুত্র আরমান শেখ হত্যা: একবছরেও মেলেনি বিচার, পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছে
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি:
গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ার গিমাডাঙ্গা মুন্সিরচর গ্রামে ঘটে যাওয়া এক হৃদয়বিদারক ঘটনার এক বছর পূর্ণ হলেও আজও মেলেনি ন্যায়বিচার। নিহত মোঃ আরমান শেখ ছিলেন স্থানীয় একজন সম্মানিত সাংবাদিক মোঃ তপু শেখের একমাত্র পুত্র।
গত ১১ মে ২০২৪ তারিখে হঠাৎ নিখোঁজ হন আরমান শেখ। পরদিন ১২ মে, টুঙ্গিপাড়া উপজেলার দাড়িয়ারকুল শ্মশানঘাট সংলগ্ন নদী থেকে তার নিথর দেহ উদ্ধার করে টুঙ্গিপাড়া থানা পুলিশ। তার মৃত্যুকে ঘিরে এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া, এবং শুরু হয় নানা প্রশ্ন ও উদ্বেগ।
আরমান শেখ ছিলেন পরিবারটির প্রধান উপার্জনকারী। তার পেছনে রয়ে গেছে মাত্র ১৪ মাস বয়সী এক পুত্রসন্তান, স্ত্রী, বাবা-মা সহ মোট ৬ সদস্যের একটি পরিবার। কিন্তু নিহত হওয়ার পর দীর্ঘ প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও তার পরিবার বিচার তো পায়নি, বরং এখন চলছে দারিদ্র্য ও নিরাপত্তাহীনতার মাঝে মানবেতর জীবন।
বিচারহীনতার অভিযোগ করে আরমানের বাবা, সাংবাদিক মোঃ তপু শেখ জানান, “আমার ছেলেকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এখন একা আমার পক্ষে পুরো পরিবার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। আমরা চরম অসহায়। স্থানীয় নেতাকর্মী কিংবা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কেউ এখনো পাশে দাঁড়ায়নি, খোঁজও নেয়নি।”
তিনি আরও বলেন, “আমি বাংলাদেশ সরকারের এবং স্থানীয় প্রশাসনের কাছে বিনীত আবেদন জানাচ্ছি—আমার একমাত্র ছেলে মোঃ আরমান শেখের হত্যার সুষ্ঠু বিচার যেন দ্রুত সম্পন্ন হয়।”
উল্লেখ্য, ঘটনার পর থেকে গোপালগঞ্জ জেলা ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলার সকল সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে একাধিকবার মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। তারা এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করলেও এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ দেখা যায়নি।
এই ঘটনা শুধু একটি পরিবারের নয়, সমাজের বিবেকের প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে—একজন সাংবাদিক পিতার পুত্রের হত্যাকাণ্ডেও যদি বিচার না মেলে, তবে সাধারণ মানুষের ভাগ্যে কী আছে।